ফেসবুক লাইভে এসে বিষপানে আত্মহত্যা, গ্রেফতার ৪
রংপুরে এক যুবক ফেসবুক লাইভে এসে বিষপান করে আত্মহত্যা করে। লাইভে এসে বিষপানের প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকার সাভার থেকে নিহতের স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার ভোরে সাভারের হেমায়েতপুরের একতা হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শনিবার দুপুরে র্যাব-৪ এর সিপিসি-২ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
গ্রেফতাররা হলো- নিহত ইমরোজ হোসেন রনির স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিন সাথী (২৩), শাহজাহান ইসলাম বাদল (৫০), ইমদাদুল হক (৩৫) ও বিথী আক্তার (৩০)। এরা সবাই আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান বলেন, রংপুরের পীরগাছা থানার হাশিম গ্রামের বাদল মিয়ার মেয়ের সঙ্গে একই এলাকার ইমরোজ হোসেন রনির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘদিন সম্পর্কের পর চার বছর আগে শামীমা ইয়াসমিন সাথীকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন রনি। বছরখানেক পর তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম হয়। এরপর বছরখানেক পর তাদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সাথী তার স্বামীর বাড়ি থেকে সন্তানকে নিয়ে তার চাচা মুকুল মিয়ার বাড়িতে চলে যান।
খবর পেয়ে রনি তার স্ত্রীকে আনতে চাচাশ্বশুর বাড়িতে গেলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের মেয়ে ও নাতির ভরণ-পোষণের জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করে রনির কাছে। তাদের সঙ্গে দাবির সুর মিলায় তার স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিন সাথী। তাদের চাহিদাকৃত টাকা না দিয়ে তার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে অপমান-অপদস্ত করে।
পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইমরোজ হোসেন রনি ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, আমি আজ বিষপান করে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়েছি। আমার আত্মহত্যার জন্য স্ত্রী, শ্বশুর, চাচাশ্বশুর ও ভায়রা ভাইসহ শ্বশুরবাড়ির আরও কয়েকজনকে দায়ী করে আত্মহত্যা করছি।
নিহতের মা বলেন, ইমরোজ হোসেন রনির মৃত্যুর পর আত্মহত্যায় প্ররোচনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার শ্বশুরবাড়ির বেশ কয়েকজন লোকের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
র্যাব জানায়, ফেসবুকে লাইভে এসে রনির আত্মহত্যার ঘটনা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের পাশাপাশি ছায়াতদন্ত শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সাভারের হেমায়েতপুর একতা হাউজিং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে শনিবার দুপুরে তাদের রংপুরের পীরগাছা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।